স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের নতুন মেয়র বৃটিশ-বাংলাদেশী আমিনা খাতুন এমবিই

Syeda Amina Khatun, MBE,
Mayor of Sandwell Metropolitan Borough Council

প্রথম বাংলাদেশী মুসলিম মহিলা হিসেবে স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন বৃটিশ-বাংলাদেশী কাউন্সিলর সৈয়দা আমিনা খাতুন এমবিই। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের বার্মিংহামের পার্শ্ববর্তী স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের মেয়র হিসেবে তিনি আগামী এক বছরের জন্য দ্বায়িত্ব পালন করবেন।

১৯৬৯ সালে ১০ জানুয়ারী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া সৈয়দা আমিনা খাতুন পরিবারের সাথে বৃটেনে আসেন ১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে। বৃটিশ পরিবেশে বড় হলেও আমিনা খাতুন সর্বদায় ছিলেন পুরোদস্তুর একজন বাংলাদেশী। জন্মলগ্ন থেকেই মানুষের জন্য কাজ করার প্রেরণা তাকে পরিণত করেছে একজন নিবেদিত প্রাণ সমাজকর্মী হিসেবে। বার্মিংহামের স্যান্ডওয়েল সিটি কাউন্সিল থেকে লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচন করে তিনি টানা ৬ষ্ঠ বারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। আর গত মঙ্গলবার স্যান্ডওয়েল সিটি কাউন্সিলের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মহিলা মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন মহিয়সি এই নারী। সৈয়দা আমিনা খাতুন, এমবিই, পরিবারের সম্মতিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের উচারগাঁও গ্রামের সৈয়দ বাড়ির সৈয়দ রাজা মিয়া‘র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের গর্বিত জননী।

সৈয়দা আমিনা খাতুন গত মঙ্গলবার স্যান্ডওয়েল কাউন্সিল হাউসে আনুষ্টানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের পর তরুন প্রজন্মের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের বিজয়ের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ব্রিটেনের মূলধারার রাজনীতিতে ব্রিটিশ বাঙালী তরুণ প্রজন্মকে অবশ্যেই এগিয়ে আসতে হবে। তার এ অর্জনের জন্য তিনি সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে ধন্যবাদ জানান। আমিনা খাতুন ১৯৮৬ সালে শিক্ষা বিভাগের একজন গবেষণা কর্মী হিসাবে তার প্রথম কার্মজীবন শুরু করেন। আশির দশক থেকেই তিনি কাজের পাশাপাশি সমাজ সংস্কারে মনোনিবেশ করেন, বিশেষ করে মহিলাদের সামাজিক মানউন্নয়নে তিনি এক এক করে গড়ে তোলেন বাংলাদেশি উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন এবং ইয়ুথ গ্রুপ ফর লোকাল ইয়াং উইমেনস। সেইসাথে মা এবং টডলার গ্রুপের মতো মহিলা সংস্থাগুলো পরিচালনা ও সহায়তার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। তিনি পরিবেশ উন্নয়নে তরুন ও প্রবিণদের সমন্নয় সাধন করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পরিচালনা করেন। ১৯৯৫ সালে একজন ইউথ ওয়ার্কার হিসেবে কাজ শুরুর পর তিনি “আশা প্রকল্প” নামে স্থানীয় একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ পরিচালনার দ্বায়িত্ব নেন। তিনি রাউলি রেজিস এবং টিপটন প্রাইমারি কেয়ার ট্রাস্টের অ-নির্বাহী পরিচালক। সামাজিক এ সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করার পাশাপাশি তিনি লেবার পার্টির রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং ১৯৯৯ সালে স্যান্ডওয়েল মেট্রোপলিটন কাউন্সিলের নির্বাচনে টিপটন গ্রিন এলাকা থেকে প্রথমবারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সমাজ সংস্কার ও উন্নয়নে সৈয়দা আমিনা খাতুনের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে ২০০৪ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আমিনা খাতুনের হাতে সম্মানজনক খেতাব অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার বা এমবিই তুলে দেন। আমিনা খাতুন তার সকল অর্জনের পেছনে বাংলাদেশী কমিউনিটির অবদানকে স্বরণ করে তাদের প্রতি আরো বেশী দ্বায়িত্বপালনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মঈন কাদেরী বার্কিং ও ডেগেনহাম কাউন্সিলের নতুন মেয়র

Quadri Moin,
Mayor, Barking & Dagenham

বাংলাদেশী বংশদ্ভত তরুন রাজনীতিবিদ মঈন কাদেরী মঙ্গলবার বার্কিং ও ডেগেনহাম কাউন্সিলের নতুন সিভিক মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আগামী এক বছরের জন্য তিনি মেয়র হিসেবে বাংলাদেশী অধ্যুষিত এ বারার দ্বায়িত্ব পালন করবেন। তার এ বিজয়ের মাধ্যমে এ অঞ্চেলে বসবাসকারী বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষের দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হলো।

মঈন কাদেরী ১৯৭৯ সালের ১লা মার্চ পাবনার ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। ৪ ভায়ের মধ্যে মঈন তার পিতার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। তার পিতা পাবনার বিখ্যাত আইনজীবি এ্যাডভোকেট জহির আলী কাদেরী। যিনি পাবনা বার কাউন্সিলের একাধারে ৫ বার সভাপতি ও ৩ বার সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর মঈনের মা মরহুমা নিলুফার কাদেরী ছিলেন একজন সমাজকর্মী ও ১৫ বছর যাবৎ পাবনা সদর পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলর। মঈন পাবনা কমার্স কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়ের পাশ করার পর পাবনা এ্যডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে বিকম পাশ করেন। মঈন কাদেরী গ্রামের বাড়ী পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার সাতবিলা গ্রামে।

মঈন কাদেরী ২০০১ সালে প্রথম বৃটেনের বুকে পা রাখের উচ্চ শিক্ষার তাগিদে। ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট লন্ডন এ। এখান থেকেই তিনি মার্কেটিং এ গ্রজুয়েশন শেষ করেন ২০১০ সালে। ছোট বেলা থেকেই রাজনীতি সচেতন মঈন সবসময় ছিলেন রাজনৈতিক বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। ২০১০ সালে খাতাকলমে লেবার পার্টির রাজনীতিতে যোগ দিলেও এই দলটির সাথে তার সক্ষতা বহু পুরানো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালিন সময়ে রাজনৈতিক সক্রিয়তা তাকে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অফিসার পদে কাজ করতে সহায়তা করে। এসময় স্টুডেন্ট ফাইন্যান্স নিয়ে সরকারের নীতির বিরোধীতা করে ছাত্রদের অধিকার আদায়ে “লিড স্ট্রাইক অন পার্লামেন্ট“ নামে ২০০৯ সালের আন্দোলনে বৃটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত মিলিয়নের অধিক ছাত্রদের নেতৃত্ব দেন মঈন কাদেরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে কর্মজীবনে এসেও থেমে থাকেনি তার পথ চলা। কমিউনিটির বিভিন্ন ইস্যুতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন এই তরুন উদ্যোমী যুবক। কভির চলাকালীন সময়ে স্থানীয় মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করে গনমানুষের হ্রদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে লেবার পার্টি থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং প্রতিবছরই এই পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত মঙ্গলবার সিভিক মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলেন মঈন কাদেরী।

মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর একান্ত সক্ষাৎকারে মঈন কাদেরী বলেন, আপনার পরিশ্রম ও ত্যাগ একদিন আপনাকে তার গন্তব্যে পৌচ্ছে দেবে। আপনি যদি কোন ত্যাগ না করেন তাহলে প্রাপ্তি আশা করতে পারেন না। যেকোনো জিনিস ছোট থেকে বড় হতে হলে হামাগুড়ি দিয়ে বড় হতে হয়। ছোট থেকে বড় হতে হলে সকল কাজেই আমাদেরকে পরিশ্রমের মাধ্যমে তা অর্জন করতে হবে। সুতরাং আসুন আমরা পরিশ্রম করি। আমরা বাঙালি জাতি বীরের জাতি। পরিশ্রম করলে আমরা অবশ্যই আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। আমি চাই যে যেখানে যেটা পছন্দ করে তাকে সেখানে সেটা করতে দেয়া উচিত এবং যে যেটা ভালোবাসে তার সেটাই করা উচিত।

আজকের সফলতার পেছনে কাদের অবদান আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে মঈন বলেন, আমাকে সবচেয়ে বেশী ইনিস্পাইরেশন দিয়েছে ড্যারেন রডওয়েল, আমার মা বাবা ও ভাই বোন ও আমার পরিবার।

পরিশেষে মঈন সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, নিঃসন্দেহে আজকের মূহুর্তটি একটি গর্বের ও আনন্দের মুহূর্ত। আমি বার্কিং ও ডেগেনহামের অধিবাসীদের নতুন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি আশা করি নতুন মেয়র হিসাবে বার্কিং ও ডেগেনহামের অধিবাসীদেরকে নতুন আসা এবং ভরসা দিতে পারব। অবশ্যই আমি চেষ্টা করব সকল মানুষের জন্য কাজ করতে। বার্কিং ও ডেগেনহাম সহ এবং সারা ইউকেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সকলকে আমি বলতে চায় যে যেখানে আছেন বার্কিং ও ডেগেনহামের দরজা আপনাদের জন্য উন্মুক্ত।

সাংবাদিকঃ তৌহিদুল করিম মুজাহিদ

বৃটেনের ওয়ার্দিং কাউন্সিলের নতুন মেয়র সিলেটের ইবশা চৌধুরী

Youngest British Bangladeshi Mayor Ibsha Choudhury

সিলেট সিটি করপোরেশনের খুররুম খলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মরহুম আলহাজ্ব গোলাম রব্বানী চৌধুরী (আমোদ মিয়া)’র বড় ছেলে সিলেটের কৃতি সন্তান ইবশা আহমেদ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের ওয়ার্দিং বারা কাউন্সিলের নতুন সিভিক মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার কাউন্সিল ভবনের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভায় কাউন্সিলরদের ভোটে ইবশা চৌধুরী নির্বাচিত হন। তিনি আগামী এক বছর ওয়ার্দিং কাউন্সিলের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

মেয়র ইবশা চৌধুরী লেবার পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত হন ২০১৯ সালে এবং ৫ বছরের ব্যবধানে নিজের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে ওয়ার্দিং কাউন্সিলের প্রথম মুসলিম কাউন্সিলর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সল্প সময়ের ব্যবধানে নিজ কর্মগুনে তিনি কাউন্সিলর থেকে ডেপুটি মেয়র এবং সর্বশেষ গত মঙ্গলবার তিনি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দ্বায়িত্ব গ্রহন করেন। ৪১ বছর বয়সী ইবশা চৌধুরী বাংলাদেশি বংশদ্ভত সর্বকনিষ্ঠ মেয়র। গত এক বছর তিনি ওয়ার্দিং কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। ইবশা চৌধুরীর আগে বাংলাদেশি বংশদ্ভত ফেরদৌসী বেগম ২০২২ সাল থেকে মেয়র হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, ইবশা চৌধুরী ২০২১ সালে ক্যাসেল ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এই ওয়ার্ড থেকে ইতিপূর্বে লেবার পার্টি কখনও নির্বাচনে জিততে পারেনি। কাউন্সিলর থাকাকালিন সময়ে ইবশা চৌধুরী ওয়ার্দিং টাউন ফুটবল ক্লাবের ইকুয়ালিটি অফিসারের দায়িত্বও পালন করছেন। ক‌রোনা মহামারির সময় তিনি একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে স্থানীয় মানুষের পাশে থেকে কমিউনিটির কল্যানে কাজ করেন।  এ সময় তিনি ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস এর খাবারের সমন্বয় ও সরবরাহে সার্বিকভাবে সহায়তা করে বেশ আলোচনায় আসেন।

ইবশা চৌধুরী জন্ম বাংলাদেশের সিলেট শহরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের খুররামখলা আবাসিক এলাকায়। তিনি সিলেট এমসি কলেজে লেখাপড়া করেন। ২০০০ সা‌লে তিনি পারিবারিক সূত্রে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। গোলাম রাব্বানী আমোদ চৌধুরী ও জেবু সুলতানা চৌধুরীর চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে ইবশা চৌধুরী সবার বড়। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া ইবশা চৌধুরী যুক্তরাজ্যে সিভিল এনফোর্সমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি সাসেক্স পুলিশের ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার গ্রুপের অ্যাডভাইজার পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

মেয়র হিসেবে শপফ নেয়ার পর এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ইবশা চৌধুরী বলেন, ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির প্রতি তার একটা মোহ কাজ করতো। সেই প্রেরনা থেকেই যুক্তরাজ্যের মূল ধারার রাজনীতিতে আমার পদচারনা। সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের জন্য সুযোগ-সুবিধা ও সমানাধিকার  নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে একজন বাংলাদেশি হিসেবে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চাই।

সাংবাদিকঃ তৌহিদুল করিম মুজাহিদ

ফ্রান্সে স্কুলে আবায়া নিষিদ্ধ

 

France ban the wearing of abayas in schools

ফ্রান্সের সরকারি স্কুলগুলোতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের আবায়া পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে এ নিষেধাজ্ঞা। সোমবার দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল টিএফওয়ানকে বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্কুলে আর আবায়া পরা যাবে না।’ তিনি জানান, গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল পুনরায় খোলার আগেই জাতীয় পর্যায়ে সবার কাছে তিনি নতুন নিয়মটি সুস্পষ্ট করবেন।

ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে আবায়া পরা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্কের পর দেশটির শিক্ষামন্ত্রী নতুন এ সিদ্ধান্ত নিলেন। সম্প্রতি ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে আবায়া পরা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। ডানপন্থি দলগুলো মুসলিম নারীদের এ পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিলেও বামপন্থি দলগুলো এ ক্ষেত্রে মুসলিম নারী ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।

দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে ২০০৪ সাল থেকে মেয়েদের মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ২০১০ সালে দেশটিতে নিকাব (পুরো মুখ ঢেকে রাখা বোরকা) পরা নিষিদ্ধ করা হয়। সে সময় সরকারের এমন সি

দ্ধান্তে দেশটির ৫০ লাখের বেশী মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছিল।

উনিশ শতক থেকেই ফ্রান্সে সরকারি স্কুল ও ভবনগুলোতে ধর্মীয় প্রতীক বা নিদর্শন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কয়েকটি মুসলিম সংগঠন নিয়ে গঠিত জাতীয় সংস্থা ফ্রেন্স কাউন্সিল অব মুসলিম ফেইথ (সিএফসিএম) জানিয়েছে, কেবল পোশাক পরা ‘কোনো ধর্মীয় প্রতীক হতে পারে না।’

অপুষ্টিতে ভুগছে মালির ১০ লক্ষাধিক শিশু

আফ্রিকার দেশ মালিতে ১০ লাখের বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, যার মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে দুই লাখেরও বেশি। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। খবর আনাদোলু এজেন্সি। সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, মালির প্রতি চারজনের মধ্যে একজন মাঝারি থেকে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যাদের বড় একটা অংশ শিশু। এছাড়া মেনাকার সংঘাতপূর্ণ বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক শিশু দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়েছে। মালি সফর শেষে ইউনিসেফ ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাংবাদিকেদের এ ব তথ্য জানান। ইউনিসেফের কর্মকর্তা টেড চাইবান বলেন, ‘কঠিন মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মালি। এই সংকট মোকাবেলায় জরুরি সহায়তার প্রয়োজন।’ এই সংকট মোকাবেলায় ইউনিসেফ কাজ চালিয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। ২০২০ সালের পর থেকে দুটি অভ্যুত্থান ঘটে মালিতে। এ পরিপ্রেক্ষিতে নানা ধরনের সংঘাতে জর্জরিত দেশটির নাগরিকরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।

http://Chronic malnutrition, or stunting, affects more than 26 per cent of children in Mali

A starving child from the Mali Tribes waiting with an empty can for food. (Photo by John Downing/Getty Images)

 

আসাদের পদত্যাগের দাবিতে সিরিয়ায় বিক্ষোভ

 

https://www.youtube.com/watch?v=9cQLb8H80ws&list=PLSCMPm7q1k_6rou1xyWFlZXTQnbipKXFS&index=1&t=2s

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগের দাবিতে সরকারনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বিক্ষোভ করেছে শত শত মানুষ। অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিবাদে দুই সপ্তাহ আগে দক্ষিণ সিরিয়ায় এই বিক্ষোভ শুরু হলেও দ্রুতই তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয়।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, আর্থিক দুর্নীতি ও সরকারের অব্যবস্থাপনা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে গতি দিয়েছে। সাম্প্রতিক এই জনবিক্ষোভের শুরু হয়েছিল সিরিয়ার বর্তমান ভয়াবহ অর্থনৈতিক দূরাবস্থার প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে; কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তা সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। শুক্রবার দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের বিক্ষোভ মিছিলগুলোতে ধ্বনিত হয়েছে- ‘বাশার দূর হোক, সিরিয়া স্বাধীন হোক’।

সিরিয়া বর্তমানে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে। ১২ বছর আগে যখন গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন এক ডলারের বিপরীতে সিরিয়ান পাউন্ডের দর ছিল ৪৭। বর্তমানে সেই মূল্যমান নেমে পৌঁছেছে ১৫ হাজার ৫০০তে। সিরিয়ার ইতিহাসে এর আগে ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের এই পরিমাণ দরপতন ঘটেনি।

চলতি বছর জুন মাসে জাতিসংঘ বলেছিলে, সিরিয়ার ১২ বছরের সংঘাত  দেশটির ৯০ শতাংশ জনগণকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে এনেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানির দাম এবং থাকছে না বিদ্যুৎ।

সিরিয়ার ১৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩টি ব্যাতীত বাকিগুলো এখনও রাজধানী দামেস্কে ক্ষমতাসীন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে রয়েছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলোতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বিরল, কিন্তু এবারের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মূলত সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলোতেই। এমনকি এই বিক্ষোভে সাড়া দিয়েছেন দ্রুজ ধর্মাবলম্বীরাও, যারা দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ। গত ১২ বছরে কখনও কোনো আন্দোলন-প্রতিবাদে অংশ নেয়া দ্রুজরা এই প্রথম কোনো আন্দোলনে নামলেন।

মালয়েশিয়ায় মধ্য নির্বাচনে বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জ

মালয়েশিয়ার রাজ্য নির্বাচনে নির্বাচনে বিরোধী দলীয় জোটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিজয় অর্জন করেছে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ক্ষমতাসীন জোট। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিজয় আনোয়ার ইব্রাহিমকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ এ দেশটিতে ক্ষমতা সুসংহত করার ইঙ্গিত বহন করে।

দেশটির ছয়টি রাজ্যে অনুষ্ঠিত শনিবারের এ নির্বাচন আনোয়ার ইব্রাহিমের জন্য সবচেয়ে কঠিন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছিল। গত বছর নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পর জোট সরকারের প্রধান হিসেবে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। এ নির্বাচন সংসদে বর্তমান দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওপর কোন প্রভাব ফেলবেনা। তবে, এটি আনোয়ার ইব্রাহিমের সমর্থনের ব্যারোমিটার হিসাবে গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছিল। বর্তমান সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়দের মোকাবেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশের সকল ক্ষেত্রে আরো বেশী প্রতিনিধিত্ব নিশিত করার জন্য কাজ করছেন।

নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, আনোয়ারের পাকাতান হারাপান জোট সেলাঙ্গর, পেনাং এবং নেগেরি সেম্বিলান রাজ্যে জয় লাভ করেছে, অপর তিনটি রাজ্যে জিতেছে বিরোধী জোট পেরিকাতান নাসিওনাল যারা মালয়দের প্রাধান্যে বিশ্বাসী।

লন্ডনের মেয়র পদে লড়ছেন বাংলাদেশি মোজাম্মেল হোসেন

লন্ডন প্রতিনিধিঃ লন্ডনের মেয়র পদে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেন। তিনি ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ (টোরি) পার্টির প্রার্থীর তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। লন্ডনের আসন্ন মেয়র নির্বাচনে সম্ভাব্য তিনজন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছেন টোরি পার্টির নীতিনির্ধারকরা। সংক্ষিপ্ত সেই তালিকায় মোজাম্মেল হোসেনের নাম রয়েছে। বাকি দু’জন হলেন কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতা সুসান হল এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ও প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ড্যানিয়েল করস্কি। সংক্ষিপ্ত এই তালিকা থেকে সাক্ষাৎকার গ্রহণের পর একজনের নাম চূড়ান্ত করা হবে। আগামী ১৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম জানা যাবে।

বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম নেয়া মোজাম্মেল হোসেন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুতে। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব অর্জন করেন তিনি। লন্ডনের লিঙ্কনস’ ইন থেকে ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মোজাম্মেল হোসেন বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ অপরাধ বিষয়ক আইনজীবী এবং ব্রিটেনের রাজপরিবারের আইনজীবী প্যানেলের সদস্য। তিনি রাজপরিবারের আইনজীবী প্যানেলেরও সদস্যপদ পেয়েছেন।

খালেদার কারাবাস বিএনপি’র জন্য শাপে বর?

খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দৃষ্টি কেড়েছে৷ কিন্তু সরকার সেই আন্দোলনেও বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ৷ তাহলে বিএনপি’র আন্দোলন কতদিন শান্তিপূর্ণ থাকবে? আর সরকারও বা কতদিন এভাবে চলতে দেবে?বিস্তারিত…

শিরোনাম