রবিবার পূর্ব লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চ্যারিটি নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা

প্রতিবছরের মত এবারও লন্ডনে ৩য় বারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চ্যারিটি বোট রেইস। আসছে রবিবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৪টা পর্যন্ত ফেয়ারলপ ওয়াটার্স কান্ট্রি পার্কে আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক এ আয়োজন। গিফট ফাউন্ডেশন, নিউহ্যাম ইয়ুথ লিংক ও সিস্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে প্রতি বছর গ্রীষ্ম মৌসুমে এ আয়োজন করে আসছে। আমাদের ব্যস্ততম জীবন থেকে কিছুটা সময় পরিবার ও সন্তানদের সাথে নিয়ে দেশীয় কৃষ্টি ও কালচারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে স্বপরিবারে চলে আসতে পারেন। প্রতিবছরের মত এবারও উপস্থিত দর্শক ও তাদের সন্তানদের জন্যও রাখা হয়েছে নানা ধরনের আয়োজন।

এবারের চ্যারিটি বোট রেইসে উপজেলা গ্রুপ, সিস্টার্স গ্রুপে, মসজিদ গ্রুপ ও কমিউনিটি লিডার্স গ্রুপে ভাগ করে মোট ৪টি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রতিযোগীতার মাধ্যমে অংশগ্রহনকারী দলগুলো আয়োজক প্রতিষ্ঠান অথবা তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের জন্য ফান্ডরেইস করতে পারবেন। সেইসাথে তারা দলগত অথবা ব্যক্তিগতভাবে টাগ অফ ওয়ার, ক্যারম বোর্ড ও লঙ্গি দৌড় প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিতে পারবেন। এছাড়াও সেখানে থাকবে চিল্ড্রেন এন্ড ইউথ এ্যাকটিভিটিজ, ফ্যান ফেয়ার সহ নানান আয়োজন। দিনটিকে উপভোগ করতে পরিবার নিয়ে চলে আসুন আর অতিত রোমন্থন করার পাশাপাশি প্রবাসে বড় হওয়া সন্তানদেরকে দিন দেশের আমেজ। পিকনিকের আমেজে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারকে নিয়ে মেতে উঠুন অনাবিল আনন্দে।

স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের নতুন মেয়র বৃটিশ-বাংলাদেশী আমিনা খাতুন এমবিই

Syeda Amina Khatun, MBE,
Mayor of Sandwell Metropolitan Borough Council

প্রথম বাংলাদেশী মুসলিম মহিলা হিসেবে স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন বৃটিশ-বাংলাদেশী কাউন্সিলর সৈয়দা আমিনা খাতুন এমবিই। ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের বার্মিংহামের পার্শ্ববর্তী স্যান্ডওয়েল কাউন্সিলের মেয়র হিসেবে তিনি আগামী এক বছরের জন্য দ্বায়িত্ব পালন করবেন।

১৯৬৯ সালে ১০ জানুয়ারী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া সৈয়দা আমিনা খাতুন পরিবারের সাথে বৃটেনে আসেন ১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে। বৃটিশ পরিবেশে বড় হলেও আমিনা খাতুন সর্বদায় ছিলেন পুরোদস্তুর একজন বাংলাদেশী। জন্মলগ্ন থেকেই মানুষের জন্য কাজ করার প্রেরণা তাকে পরিণত করেছে একজন নিবেদিত প্রাণ সমাজকর্মী হিসেবে। বার্মিংহামের স্যান্ডওয়েল সিটি কাউন্সিল থেকে লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচন করে তিনি টানা ৬ষ্ঠ বারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। আর গত মঙ্গলবার স্যান্ডওয়েল সিটি কাউন্সিলের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মহিলা মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন মহিয়সি এই নারী। সৈয়দা আমিনা খাতুন, এমবিই, পরিবারের সম্মতিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের উচারগাঁও গ্রামের সৈয়দ বাড়ির সৈয়দ রাজা মিয়া‘র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের গর্বিত জননী।

সৈয়দা আমিনা খাতুন গত মঙ্গলবার স্যান্ডওয়েল কাউন্সিল হাউসে আনুষ্টানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের পর তরুন প্রজন্মের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের বিজয়ের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ব্রিটেনের মূলধারার রাজনীতিতে ব্রিটিশ বাঙালী তরুণ প্রজন্মকে অবশ্যেই এগিয়ে আসতে হবে। তার এ অর্জনের জন্য তিনি সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে ধন্যবাদ জানান। আমিনা খাতুন ১৯৮৬ সালে শিক্ষা বিভাগের একজন গবেষণা কর্মী হিসাবে তার প্রথম কার্মজীবন শুরু করেন। আশির দশক থেকেই তিনি কাজের পাশাপাশি সমাজ সংস্কারে মনোনিবেশ করেন, বিশেষ করে মহিলাদের সামাজিক মানউন্নয়নে তিনি এক এক করে গড়ে তোলেন বাংলাদেশি উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন এবং ইয়ুথ গ্রুপ ফর লোকাল ইয়াং উইমেনস। সেইসাথে মা এবং টডলার গ্রুপের মতো মহিলা সংস্থাগুলো পরিচালনা ও সহায়তার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। তিনি পরিবেশ উন্নয়নে তরুন ও প্রবিণদের সমন্নয় সাধন করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পরিচালনা করেন। ১৯৯৫ সালে একজন ইউথ ওয়ার্কার হিসেবে কাজ শুরুর পর তিনি “আশা প্রকল্প” নামে স্থানীয় একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ পরিচালনার দ্বায়িত্ব নেন। তিনি রাউলি রেজিস এবং টিপটন প্রাইমারি কেয়ার ট্রাস্টের অ-নির্বাহী পরিচালক। সামাজিক এ সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করার পাশাপাশি তিনি লেবার পার্টির রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং ১৯৯৯ সালে স্যান্ডওয়েল মেট্রোপলিটন কাউন্সিলের নির্বাচনে টিপটন গ্রিন এলাকা থেকে প্রথমবারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সমাজ সংস্কার ও উন্নয়নে সৈয়দা আমিনা খাতুনের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে ২০০৪ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আমিনা খাতুনের হাতে সম্মানজনক খেতাব অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার বা এমবিই তুলে দেন। আমিনা খাতুন তার সকল অর্জনের পেছনে বাংলাদেশী কমিউনিটির অবদানকে স্বরণ করে তাদের প্রতি আরো বেশী দ্বায়িত্বপালনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মঈন কাদেরী বার্কিং ও ডেগেনহাম কাউন্সিলের নতুন মেয়র

Quadri Moin,
Mayor, Barking & Dagenham

বাংলাদেশী বংশদ্ভত তরুন রাজনীতিবিদ মঈন কাদেরী মঙ্গলবার বার্কিং ও ডেগেনহাম কাউন্সিলের নতুন সিভিক মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আগামী এক বছরের জন্য তিনি মেয়র হিসেবে বাংলাদেশী অধ্যুষিত এ বারার দ্বায়িত্ব পালন করবেন। তার এ বিজয়ের মাধ্যমে এ অঞ্চেলে বসবাসকারী বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষের দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হলো।

মঈন কাদেরী ১৯৭৯ সালের ১লা মার্চ পাবনার ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। ৪ ভায়ের মধ্যে মঈন তার পিতার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। তার পিতা পাবনার বিখ্যাত আইনজীবি এ্যাডভোকেট জহির আলী কাদেরী। যিনি পাবনা বার কাউন্সিলের একাধারে ৫ বার সভাপতি ও ৩ বার সেক্রেটারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর মঈনের মা মরহুমা নিলুফার কাদেরী ছিলেন একজন সমাজকর্মী ও ১৫ বছর যাবৎ পাবনা সদর পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলর। মঈন পাবনা কমার্স কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়ের পাশ করার পর পাবনা এ্যডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে বিকম পাশ করেন। মঈন কাদেরী গ্রামের বাড়ী পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার সাতবিলা গ্রামে।

মঈন কাদেরী ২০০১ সালে প্রথম বৃটেনের বুকে পা রাখের উচ্চ শিক্ষার তাগিদে। ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট লন্ডন এ। এখান থেকেই তিনি মার্কেটিং এ গ্রজুয়েশন শেষ করেন ২০১০ সালে। ছোট বেলা থেকেই রাজনীতি সচেতন মঈন সবসময় ছিলেন রাজনৈতিক বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। ২০১০ সালে খাতাকলমে লেবার পার্টির রাজনীতিতে যোগ দিলেও এই দলটির সাথে তার সক্ষতা বহু পুরানো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালিন সময়ে রাজনৈতিক সক্রিয়তা তাকে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অফিসার পদে কাজ করতে সহায়তা করে। এসময় স্টুডেন্ট ফাইন্যান্স নিয়ে সরকারের নীতির বিরোধীতা করে ছাত্রদের অধিকার আদায়ে “লিড স্ট্রাইক অন পার্লামেন্ট“ নামে ২০০৯ সালের আন্দোলনে বৃটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত মিলিয়নের অধিক ছাত্রদের নেতৃত্ব দেন মঈন কাদেরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে কর্মজীবনে এসেও থেমে থাকেনি তার পথ চলা। কমিউনিটির বিভিন্ন ইস্যুতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন এই তরুন উদ্যোমী যুবক। কভির চলাকালীন সময়ে স্থানীয় মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করে গনমানুষের হ্রদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে লেবার পার্টি থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং প্রতিবছরই এই পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত মঙ্গলবার সিভিক মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলেন মঈন কাদেরী।

মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর একান্ত সক্ষাৎকারে মঈন কাদেরী বলেন, আপনার পরিশ্রম ও ত্যাগ একদিন আপনাকে তার গন্তব্যে পৌচ্ছে দেবে। আপনি যদি কোন ত্যাগ না করেন তাহলে প্রাপ্তি আশা করতে পারেন না। যেকোনো জিনিস ছোট থেকে বড় হতে হলে হামাগুড়ি দিয়ে বড় হতে হয়। ছোট থেকে বড় হতে হলে সকল কাজেই আমাদেরকে পরিশ্রমের মাধ্যমে তা অর্জন করতে হবে। সুতরাং আসুন আমরা পরিশ্রম করি। আমরা বাঙালি জাতি বীরের জাতি। পরিশ্রম করলে আমরা অবশ্যই আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। আমি চাই যে যেখানে যেটা পছন্দ করে তাকে সেখানে সেটা করতে দেয়া উচিত এবং যে যেটা ভালোবাসে তার সেটাই করা উচিত।

আজকের সফলতার পেছনে কাদের অবদান আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে মঈন বলেন, আমাকে সবচেয়ে বেশী ইনিস্পাইরেশন দিয়েছে ড্যারেন রডওয়েল, আমার মা বাবা ও ভাই বোন ও আমার পরিবার।

পরিশেষে মঈন সকলকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, নিঃসন্দেহে আজকের মূহুর্তটি একটি গর্বের ও আনন্দের মুহূর্ত। আমি বার্কিং ও ডেগেনহামের অধিবাসীদের নতুন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি আশা করি নতুন মেয়র হিসাবে বার্কিং ও ডেগেনহামের অধিবাসীদেরকে নতুন আসা এবং ভরসা দিতে পারব। অবশ্যই আমি চেষ্টা করব সকল মানুষের জন্য কাজ করতে। বার্কিং ও ডেগেনহাম সহ এবং সারা ইউকেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সকলকে আমি বলতে চায় যে যেখানে আছেন বার্কিং ও ডেগেনহামের দরজা আপনাদের জন্য উন্মুক্ত।

সাংবাদিকঃ তৌহিদুল করিম মুজাহিদ

বৃটেনের ওয়ার্দিং কাউন্সিলের নতুন মেয়র সিলেটের ইবশা চৌধুরী

Youngest British Bangladeshi Mayor Ibsha Choudhury

সিলেট সিটি করপোরেশনের খুররুম খলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মরহুম আলহাজ্ব গোলাম রব্বানী চৌধুরী (আমোদ মিয়া)’র বড় ছেলে সিলেটের কৃতি সন্তান ইবশা আহমেদ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের ওয়ার্দিং বারা কাউন্সিলের নতুন সিভিক মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। মঙ্গলবার কাউন্সিল ভবনের পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল সভায় কাউন্সিলরদের ভোটে ইবশা চৌধুরী নির্বাচিত হন। তিনি আগামী এক বছর ওয়ার্দিং কাউন্সিলের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

মেয়র ইবশা চৌধুরী লেবার পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত হন ২০১৯ সালে এবং ৫ বছরের ব্যবধানে নিজের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে ওয়ার্দিং কাউন্সিলের প্রথম মুসলিম কাউন্সিলর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সল্প সময়ের ব্যবধানে নিজ কর্মগুনে তিনি কাউন্সিলর থেকে ডেপুটি মেয়র এবং সর্বশেষ গত মঙ্গলবার তিনি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দ্বায়িত্ব গ্রহন করেন। ৪১ বছর বয়সী ইবশা চৌধুরী বাংলাদেশি বংশদ্ভত সর্বকনিষ্ঠ মেয়র। গত এক বছর তিনি ওয়ার্দিং কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। ইবশা চৌধুরীর আগে বাংলাদেশি বংশদ্ভত ফেরদৌসী বেগম ২০২২ সাল থেকে মেয়র হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, ইবশা চৌধুরী ২০২১ সালে ক্যাসেল ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এই ওয়ার্ড থেকে ইতিপূর্বে লেবার পার্টি কখনও নির্বাচনে জিততে পারেনি। কাউন্সিলর থাকাকালিন সময়ে ইবশা চৌধুরী ওয়ার্দিং টাউন ফুটবল ক্লাবের ইকুয়ালিটি অফিসারের দায়িত্বও পালন করছেন। ক‌রোনা মহামারির সময় তিনি একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে স্থানীয় মানুষের পাশে থেকে কমিউনিটির কল্যানে কাজ করেন।  এ সময় তিনি ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস এর খাবারের সমন্বয় ও সরবরাহে সার্বিকভাবে সহায়তা করে বেশ আলোচনায় আসেন।

ইবশা চৌধুরী জন্ম বাংলাদেশের সিলেট শহরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের খুররামখলা আবাসিক এলাকায়। তিনি সিলেট এমসি কলেজে লেখাপড়া করেন। ২০০০ সা‌লে তিনি পারিবারিক সূত্রে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। গোলাম রাব্বানী আমোদ চৌধুরী ও জেবু সুলতানা চৌধুরীর চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে ইবশা চৌধুরী সবার বড়। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেয়া ইবশা চৌধুরী যুক্তরাজ্যে সিভিল এনফোর্সমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি সাসেক্স পুলিশের ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার গ্রুপের অ্যাডভাইজার পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

মেয়র হিসেবে শপফ নেয়ার পর এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ইবশা চৌধুরী বলেন, ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির প্রতি তার একটা মোহ কাজ করতো। সেই প্রেরনা থেকেই যুক্তরাজ্যের মূল ধারার রাজনীতিতে আমার পদচারনা। সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের জন্য সুযোগ-সুবিধা ও সমানাধিকার  নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে একজন বাংলাদেশি হিসেবে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চাই।

সাংবাদিকঃ তৌহিদুল করিম মুজাহিদ

বো গ্রিন ডেভেলপমেন্ট এর প্রথম ধাপের কাজ প্রায় সম্পন্ন

Tower Hamlets new housing project “Bow Green Development”

টাওয়ার হ্যামলেটস “বো গ্রিন ডেভেলপমেন্ট” এর প্রথম ধাপের কাজ প্রায় শেষের পথে। বো এলাকায় নির্মানাধীন এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ৫টি ধাপে। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে এখানে নতুন করে ১৪‘শ ৫০টি পরিবারের জন্য তৈরী হবে ১৪৫০ টি ফ্লাট যার মধ্যে ৩৫ শতাংশ থাকবে কাউন্সিল হোমস। প্রথম ধাপের কাজ প্রায় শেষ, যেখানে থাকছে ৩১৪টি ফ্লাট যার মধ্যে কাউন্সিলের এফোর্ডেবল রেন্টের আওতায় থাকবে ৮২টি ফ্লাট।

টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান প্রথম ধাপের কাজ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে বলেন, সরকার বা কাউন্সিল একার পক্ষে হাউজিং চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। আর এ কারনে আমাদেরকে হাউজিং এসোসিয়েশন এবং প্রাইভেট ডেভেলপারদের সাথে যৌথ ভাবে পার্টনারশীপের মাধ্যমে কাজ করে উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে হবে। বো গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প এরই একটি বাস্তব উদাহরন। এখানে নির্মিত ঘরের ৩৫ শতাংশ পাবেন কাউন্সিলের সাধারন বাসিন্দারা। একই ভাবে ভবিষ্যতে আমাদের বারায় প্লানিং গেইনে‘র ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কাউন্সিলকে প্রদানের পলিসির জন্য আমরা প্রস্তাব করেছি। এরফলে ভবিষ্যতে এফোর্ডেবল রেন্ট কাউন্সিল হাউজিংয়ের সংখ্যা ক্রমান্নয়ে বৃদ্ধি পাবে।

নির্বাহী মেয়র আরো বলেন, বড় সাইজের ঘরের জন্য আমাদের অসংখ্য পরিবার অনেক কস্ট করছে। প্রকৃত অর্থে এফোর্ডেবল ঘর তৈরীতে সহায়তা করে আমরা আমাদের হাউজিং সমস্যা সমাধানে যথাসাধ্য ভূমিকা রাখতে চাই। আমারা আশাকরি আমাদের সব পরিবারগুলো যেন একটি যথার্থ ও মানসম্পন্ন ঘরে থাকতে পারে।  অনুষ্ঠানে বার্কলে গ্রুপের সিইও রব প্রিনিস সহ আরো অনেক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রব প্রিনিস বলেন, আমরা টাওয়ার হ্যামলেটস ও জিএলএ এর সাথে কাজ করে গর্বিত। আমরা শুধু উচ্চ মানের হাউজ ডেলিভারী দিচ্ছিনা, সাথে সাথে বো গ্রিন এলাকায় পার্কসহ আরো নানাবিধ জনহিতকর সুবিধা তৈরী করছি। নির্বাহী মেয়রের পরামর্শে আমরা বড় সাইজের ঘর নির্মানের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। গেটওয়ে হাউজিং এর সিইও কেইট ফ্রাংলিন বলেন, আমরা খুশী টাওয়ার হ্যামলেটসের অনেক বাসিন্দা ২০২৫ ও ২০২৬ সালের মধ্যে  উচ্চমানের ঘরে স্থানান্তরিত হতে পারবেন।

উল্লেখ্য, বো গ্রিন ডেভেলপমেন্ট এলাকার পাশেই রয়েছ নদী, খাল ও গ্রিন পার্কসহ দৃষ্টি নন্দন পরিবেশ যা তাদের কাছের অংশ।

বার্কলে গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সেন্ট জেইমস হোমস ও গেটওয়ে হাউজিং এসোসিয়েশনের পার্টনারশীপে ২০৩৩ সালের মধ্যে মোট ৫ ধাপে পুরো হাউজিং ডেলিভারীর প্লান বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। বার্কলে গ্রুপ গত ৫ বছরে ইউকে‘তে ১৯ হাজার ঘর ডেলিভারী দিতে সক্ষম হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রুপটি বৃটিশ ইকোনমিতে ভুমিকা রেখেছে প্রায় ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন পাউন্ড।

সাংবাদিকঃ তৌহিদুল করিম মুজাহিদ

সিরিয়া থেকে ইতালি ! ফোনে ফোনে মানব পাচার !

সিরিয়া থেকে ইতালিতে ফোনে ফোনেই হচ্ছে মানব পাচার। সিরিয়া থেকে লিবিয়া, তারপর মধ্য ভ‚মধ্যসাগরজুড়ে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক অভিবাসী রুট যাত্রা সম্পর্কে এএফপি সিরিয়ার চোরাকারবারি ও অভিবাসীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

সিরিয়ার দক্ষিণে দারা প্রদেশের এক চোরাকারবারি বলেন, ‘আমরা ফোনের মাধ্যমে সব চূড়ান্ত করি।’

আরও বলেন, ‘আমরা পাসপোর্টের একটি অনুলিপি চাই। তারপর কোথায় টাকা দিতে হবে তার ঠিকানা দিয়ে দেই। কিন্তু আমরা নিজেদের আড়াল করে রাখি।’ এএফপিকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এ কথা জানান।

সিরিয়ার দক্ষিণে দারা প্রদেশের চোরাকারবারি বলেন, ‘এটি কোনো সমস্যা নয়। কারণ নিরাপত্তা কক্ষে আমাদের একজন লোক আছেন, যিনি খুব সহজেই অনুমোদন পান।’ জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার মতে, প্রায় ৯০ হাজার সিরিয়ান ইতালিতে গেছে।

চোরাকারবারিরা বলেন, ‘প্রথম দিকে বছরে আমরা একটি দল পাঠানোর মাধ্যমে কাজটা শুরু করি। এখন আমরা প্রতি মাসে একটি দল লিবিয়ায় পাঠাই।’ তারপর তাদের ইতালিতে পাঠানো হয়।

মালয়েশিয়ায় মধ্য নির্বাচনে বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জ

মালয়েশিয়ার রাজ্য নির্বাচনে নির্বাচনে বিরোধী দলীয় জোটের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিজয় অর্জন করেছে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ক্ষমতাসীন জোট। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিজয় আনোয়ার ইব্রাহিমকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ এ দেশটিতে ক্ষমতা সুসংহত করার ইঙ্গিত বহন করে।

দেশটির ছয়টি রাজ্যে অনুষ্ঠিত শনিবারের এ নির্বাচন আনোয়ার ইব্রাহিমের জন্য সবচেয়ে কঠিন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছিল। গত বছর নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পর জোট সরকারের প্রধান হিসেবে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। এ নির্বাচন সংসদে বর্তমান দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওপর কোন প্রভাব ফেলবেনা। তবে, এটি আনোয়ার ইব্রাহিমের সমর্থনের ব্যারোমিটার হিসাবে গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছিল। বর্তমান সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়দের মোকাবেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশের সকল ক্ষেত্রে আরো বেশী প্রতিনিধিত্ব নিশিত করার জন্য কাজ করছেন।

নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, আনোয়ারের পাকাতান হারাপান জোট সেলাঙ্গর, পেনাং এবং নেগেরি সেম্বিলান রাজ্যে জয় লাভ করেছে, অপর তিনটি রাজ্যে জিতেছে বিরোধী জোট পেরিকাতান নাসিওনাল যারা মালয়দের প্রাধান্যে বিশ্বাসী।

লন্ডনের মেয়র পদে লড়ছেন বাংলাদেশি মোজাম্মেল হোসেন

লন্ডন প্রতিনিধিঃ লন্ডনের মেয়র পদে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেন। তিনি ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ (টোরি) পার্টির প্রার্থীর তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। লন্ডনের আসন্ন মেয়র নির্বাচনে সম্ভাব্য তিনজন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছেন টোরি পার্টির নীতিনির্ধারকরা। সংক্ষিপ্ত সেই তালিকায় মোজাম্মেল হোসেনের নাম রয়েছে। বাকি দু’জন হলেন কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতা সুসান হল এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ও প্রযুক্তি ব্যবসায়ী ড্যানিয়েল করস্কি। সংক্ষিপ্ত এই তালিকা থেকে সাক্ষাৎকার গ্রহণের পর একজনের নাম চূড়ান্ত করা হবে। আগামী ১৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম জানা যাবে।

বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম নেয়া মোজাম্মেল হোসেন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুতে। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব অর্জন করেন তিনি। লন্ডনের লিঙ্কনস’ ইন থেকে ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মোজাম্মেল হোসেন বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ অপরাধ বিষয়ক আইনজীবী এবং ব্রিটেনের রাজপরিবারের আইনজীবী প্যানেলের সদস্য। তিনি রাজপরিবারের আইনজীবী প্যানেলেরও সদস্যপদ পেয়েছেন।

লন্ডনে ঝিনাইদহবাসীর পিঠা মেলা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শীত মানেই পিঠা-পুলির আয়োজন। ব্যস্ত প্রবাস জীবনে পিঠা-পুলির স্বাদ ছড়িয়ে দিতে রবিবার পূর্বলন্ডনের প্রাণ কেন্দ্র হুয়াইটচ্যাপেলের কলিংউড সেন্টারের পিঠা মেলার আয়োজন করে প্রবাসী ঝিনাইদাবাসীদের সংগঠন “প্রাণের ঝিনেদা“। পারিবারিক পরিবেশে আয়োজিত পিঠা মেলা ছিল সত্যিই মনোমুগ্ধকর ভিন্ন এক আয়োজন। খাওয়ার সাথে দেখার মজাও কম ছিল না। প্রত্যেকেই পরিচিত হতে থাকে নানান রকম ও স্বাদের পিঠা-পুলির সাথে। পিঠা উপভোগের পাশাপাশি আয়োজনের পুরোটা সময় জুড়ে চলে নানা রকম প্রতিযোগিতা ও বিনোদনের ব্যবস্থা।

প্রবাস জীবনের নানান ব্যস্ততার মাঝেও লন্ডন ও পার্শবর্তী শহরগুলো থেকে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ তাদের পরিবার পরিজনসহ নিজেদের ঘরে তৈরী পিঠার সমাহার নিয়ে ছুটে আসেন আনন্দঘন এ পরিবেশে যোগ দিতে। নাজমুল হাসান সোহাগ ও চ্যানেল এস এর হেড অফ চ্যারিটি সাংবাদিক তৌহিদুল করিম মুজাহিদের উপস্থাপনা আর তুহিন ফেরদৌসের পরিচালনায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বৃটেনে বসবাসকারী প্রবাসী ঝিনাইদহবাসীদের পিঠা মেলার এ আয়োজন।

কলিংউড হলে জাকযমকপূর্ণ এ আয়োজনের অংশ নিতে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে এসেছিল শতাধীক পরিবার। হরেক রকম পিঠার পসরা সাজিয়ে নিয়ে বসেছিল পিঠা মেলায় আগত পরিবারগুলো। ঝিনুক পিঠা, কুলি পিঠা, চিতই পিঠা, রসে ভিজানো পিঠা, ঝাল পাকান, মিষ্টি পাকান, ভাপা পিঠা, পাটি সাপটা, মুখ পাকড়, বালিশ পিঠা, কিমা পিঠা, দুধপুলি, চন্দ্রপুলি, জামাই ভাজা, বকুল পিঠা, বিবিখানা পিঠা, গোলাপফুল পিঠা, সিমফুল পিঠা, স্যান্ডউইচ, কলিজা সিঙ্গারা, খেজুর গুড়ের পায়েস, ননি গুরের পায়েস, মিষ্টি, গুড়ের জিলাপি, সানার জিলাপি, দই, পুডিং, খির, কেক, কাপ কেক সহ প্রায় ৩০ রকমের পিঠার সমাগম ঘটে পিঠা মেলার এ ছোট্ট আয়োজনে। কত নামের আর কত ধরনের পিঠার যে সমাগম হয়েছিল তা বোঝায়ে শেষ করা যাবে না। বাহারি রংয়ের এসব পিঠা কিনতে কাউকে অবশ্য পকেটের পয়সা খরচ করতে হয়নি। আর তাই তো পিঠা রসিকরা রিতিমত ব্যাস্ত হয়ে উঠেছিল মজার মজার সুস্বাধু পিঠার স্বাদ নিতে। অনেকে আবার বক্স ভর্তি করে নিয়ে গেছে যাবার সময়।

আয়োজকরা বলছেন, প্রবাস জীবনের ব্যাস্ততার মাঝে একটু স্বস্তি পেতে এমন আয়োজন সত্যিই আনন্দের। সেইসাথে নিড়ের সাথে নিজেদের সম্পর্ক আর ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলির সাথে আগামী প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেয়াই ছিল এই পিঠা মেলার মূল উদ্যেশ্য। আমাদের উদ্যেশ্য যে কতটা সফল তা পরিবারগুলোর দক্ষতা ও তাদের সক্রিয় উপস্থিতি দেখেই বোঝা যায়। মেলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল বাবা-মায়ের পাশাপাশি তাদের সন্তানদেরকেও আনন্দে মাতিয়ে রাখা ও পরস্পরের সাথে পরিচয় ঘটিয়ে দেয়া।

পিঠা মেলার এ আয়োজনে যোগ দিতে মাসব্যাপি প্রায় সমস্ত পরিবারগুলোই ছিল বেশ কর্মচঞ্চল। প্রতিটি ঘরেই ছিল ঈদের আনন্দ। সন্তানেরা তাদের মায়েদেরকে নানাভাবে সহায়তা করা সহ নিজেরাও তৈরী করেছে তাদের পছন্দের পিঠা-পুলি, কেক সহ নানান খাবারের আয়োজন। আর প্রতিনিয়ত পরিবারগুলোর সর্বশেষ প্রস্ততির খবরা খবর জানানো হচ্ছিল সংগঠনের ম্যাসেন্জার গ্রূপে। ফলে অন্যরাও উদ্বদ্ধ হচ্ছিল নতুন কিছু তৈরীতে। এ যেন এক ভালো কাজের প্রতিযোগীতা। অনুষ্ঠানে তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে পিঠার সমাহার দেখে। যদিও এটা ছিল পিঠা মেলা তবুও এখানে রাখা হয়েছিল দুপুরের খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। আশরাফুন রনি ও সোনিয়া ফেরদৌসের রান্না করা মজাদার খাবার খেচুরী সাথে মরিচ-পেয়াজের ভর্তা, নানান রকমের আচার, মুরগীর রোস্ট, ডিম ভোনা, খাসীর রেজালা, সালাদ সহ আরো কত কি!

খাবারের পর্ব শেষ হতে না হতেই সবাই ব্যাস্ত হয়ে উঠে তুহিন ফেরদৌসের মজার মজার আয়োজনে। বাচ্চাদের জন্য ফ্রগ জাম্প, চামচ দৌড়, মহিলাদের জন্য বালিশ খেলা, আর জামায়-বৌ‘য়ের জন্য বেলুন ফাটানো আর ফান বক্স লটারী তো বিনোদনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। তুহিনের সাথে আমাদের ছোট্ট মামনি ফিজাও কোন অংশে কম যায়নি। তার ছোট্ট হাতে শিল্পের ছোয়া ছোট ছোট শিশুদেরকে অকৃষ্ট করে রাখে। তার হাতের ফেস পেইন্ট করাতে শিশুরা সবাই ব্যাস্ত হয়ে উঠে।  যে কোন আয়োজনে গান পরিবেশনা থাকে বিশেষ আয়োজন। পিঠা মেলায় সে আয়োজনেরও কমতি ছিল না কনোভাবেই। মালিহা তাবাছ্ছুম উপমা, আলামগির আজাদ, শাহনাজ ফেরদৌস, ওমর ফারুক, নাহার নাজমুন সহ আরো অনেকেই তাদের প্রতিভার সাক্ষর রাখতে উপভোগ্য গান উপহার দিয়ে উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে রাখে। এবারের আয়োজন পিঠা মেলায় যোগ দিতে এসে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্ররা আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়েন। দীর্ঘ দিন পর এমন একটি আয়োজনে হাজির হতে পেরে সকল ঝিনেদাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠান শেষে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এমন আরো অয়োজনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপস্থিত সকলেই অত্যন্ত উৎসাহ ও আনন্দের সাথে সহমত পোষন করেন। তারা বলেন, শেকড়ের টানে আজ আমরা একত্রিত হতে পেরেছি। এ ধারা যেন অবিচল আর অব্যাহত থাকে আজীবন। আমাদের সন্তানেরা যেন নিজদেরকে চিনতে ভূল না করে। ভুলে না যায় তাদের শেকড়ের কথা, তাদের আপন জনদের কথা। ভূমিকে ভূলে না যায়। আমাদের এ প্রচেষ্ঠা তাদের জন্য নিশ্চয় নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করবে। আগামীর পথ চলা ও বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ ও নিজ জেলা ঝিনাইদহকে তুলে ধরতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভূমিকার রাখবে এটায় আমাদের প্রত্যাশা।

এ আয়োজন আমাদেরকে শুধু আনন্দই দেয়নি দিয়েছে প্রবাসে একটুকরো ঝিনেদার স্বাদ এমনই মন্তব্য উপস্থিত সকলের। পিঠা মেলার এমন মনোমুগ্ধকর আয়োজনে উপস্থিত না থাকতে পেরে অনেকেই গভীর দুঃখ ও অপারগতা প্রকাশ করেন। আগামী গ্রীষ্ম কালে পিকনিক সহ বছর জুড়ে নানা রকম আয়োজনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।

শিরোনাম