বাংলাদেশে জোড়া মাথার দুটো শিশুকে আলাদা করছেন ডাক্তাররা…
বাংলাদেশের পাবনায় কনজয়েন্ড বা মাথা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়া দুটি শিশুর অপারেশনে একধাপ অগ্রগতি হয়েছে।
ডাক্তাররা বলছেন, ১৮-মাস বয়সী রাবেয়া ও রোকাইয়ার মাথায় যে যুক্ত রক্তনালী ছিল সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে দুজনের জন্য আলাদা রক্তনালী চালু হয়।
শিশু দুটি ভাল আছে এবং তাদের জ্ঞানও ফিরেছে বলে তারা বলছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, এখন তারা শিশু দুটির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। আলাদা রক্তনালী তৈরি হলে তিনমাস পরে আবার একটি সার্জারি করা হতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জন শফিকুল ইসলাম বলছেন, ”পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমরা দেখেছি, তাদের মূল ধমনী বা শিরার পাশে কিছু বিকল্প শিরা আছে। আমরা আমরা সেটি বন্ধ করে দিয়েছি, ফলে বিকল্প শিরাগুলি আস্তে আস্তে সচল হয়ে উঠবে বলে আশা করছি। এভাবে আস্তে আস্তে তাদের দুজনের মাথার আলাদা কাঠামো তৈরি হবে। এরপর আমরা সার্জারি করে দুজনকে আলাদা করতে পারবো।”
তিনি বলছেন, সব প্রক্রিয়া শেষ হতে সব মিলিয়ে মাস ছয়েক সময় লাগতে পারে।
সারা বিশ্বেই দুর্লভ এরকম জোড়া লাগানো শিশু দুটিকে পুরোপুরি আলাদা করতে আরও সময় লাগবে বলে তারা জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার পাঁচ ঘণ্টা ধরে এই অপারেশন হয়। এতে অংশ নেন হাঙ্গেরি থেকে আসা দুই বিশেষজ্ঞ সার্জন।
শিশু দুটির বাবা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো: রফিকুল ইসলাম জানান, অপারেশনের পর শিশুদুটির জ্ঞান ফিরেছে এবং দুজনেই সুস্থ আছে।
তিনি জানান, মাথা একসাথে লাগানো থাকলেও, বাড়িতে দুজনেই স্বাভাবিক হাশিখুশী থাকে। নিয়মিত খাওয়া দাওয়া বা কথাও বলে। তবে রাবেয়া একটু বেশি কথা বলে আর রোকাইয়া একটু কম।
শিশু দুটির জন্ম পাবনা জেলার চাটমোহরে।
বাংলাদেশে এর আগে পেট, বুক বা শরীরের পেছনের অংশ জোড়া লাগানো শিশুর আলাদা করার অপারেশন হলেও, মাথা জোড়া লাগানো শিশু আলাদা করার প্রচেষ্টা এবারই প্রথম বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এর আগে তোফা ও তহুরা নামে দুটি কনজয়েন্ড শিশুর সফল চিকিৎসার খবর শুনে রাবেয়া ও রোকাইয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম শিশু দুটিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন।