পাঠ্যপুস্তকের ভুল শোধরানো হবে: বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিবিসিকে বলেছেন, বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকের সকল ভুল শোধরানো হবে।

বছরের প্রথম দিনে দেশটিতে কয়েক কোটি শিশু ও কিশোরের হাতে ৩৬ কোটির বেশী বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তুলে দেয় সরকার, কিন্তু এর পর থেকেই এসব পুস্তকের বিভিন্ন ভুল ও অসঙ্গতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে।

কয়েকদিন ধরে চলা টানা সমালোচনার প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কিছু অমার্জনীয় ভুল হবার কথা স্বীকার করে বলেন, এরই মধ্যে পাঠ্যপুস্তকের প্রধান সম্পাদক ওএসডি করা হয়েছে।

এছাড়া গঠন করা হয়েছে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি, যার একটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অপর তদন্ত কমিটিটি জাতীয় পাঠক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবির।

নুরুল ইসলাম নাহিদ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “সবক্ষেত্রেই ভুলত্রুটি থাকতে পারে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে যেসব বড় ধরণের ভুলের তথ্য পাওয়া যাবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে”।

“বড় কথা হল, আমরা সঠিক করে, কারেকশন করে পাঠিয়ে দেব।যেখানে বড় সংশোধন দরকার সেটাও করব, ছোট হলে ছোটর মধ্যে করব”, বলছিলেন মি.নাহিদ।

পাঠ্যপুস্তকের যেসব বিষয় নিয়ে মানুষ সমালোচনা করছে, তারমধ্যে রয়েছে প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তকে বর্ণ পরিচয় করিয়ে দেবার বিষয়টি।

যেমন ‘ও’ বর্ণটি দিয়ে এখানে ‘ওড়না’ শব্দটিকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে, ‘অ দিয়ে বলা হয়েছে ‘অজ’, যেটি ছাগলেরই অপ্রচলিত একটি সমার্থক শব্দ।

এই পাঠ্য বইটি নিয়ে বিতর্ক
এই পাঠ্য বইটি নিয়ে বিতর্ক

আবার এই ‘অজ’ পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য ছাগলের যে ছবিটি আঁকা হয়েছে, সেটি নিয়েও একধরণের সমালোচনা হচ্ছে।

এই সমালোচনায় বলা হচ্ছে, ছবিতে দেখা যাচ্ছে ছাগল গাছে উঠে আম খাচ্ছে, কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী এটাকে বলছেন অপপ্রচার।

তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়ে মূল বই এবং একটি অনলাইনে প্রকাশিত ছবির একটি প্রিন্ট নিয়ে এসে দেখান।

সংবাদের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি বড় গাছের মগডালে অনেক পাখির সাথে ছাগল অবস্থান করছে।

আর মূল বইতে দেখা যাচ্ছে, একটি ছোট গাছে দুই পা উঠিয়ে কিছু একটা খাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ছাগলটি, সেটির অপর দুই পা রয়েছে মাটিতে।

বলেন, কিছু অনলাইন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে গাছের উপর উঠে কাক যেমন বসে থাকে, তেমনি ছাগল বসে আছে।

এরকম খবর ছাপানোকে মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর বলে বর্ণনা করেন মি. নাহিদ।

তবে অ বর্ণ পরিচয় করিয়ে দিতে অজ’র মত একটি অপ্রচলিত শব্দ ব্যাবহার ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন মি. নাহিদ এবং এরকম একটি ছবি ব্যাবহার না করলেও চলত বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে জানা যাচ্ছে, এসব ছবি আঁকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এনসিটিবির যে শিল্পী তাকেও গতকাল বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই বরখাস্তের সত্যতা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী তা অস্বীকার করেননি।

বইয়ের পেছনে একটি বানান ভুল থাকার কারণে ভিন্ন অর্থ তৈরি করেছে, সেটিকে বড় ভুল বলে স্বীকার করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

সেটি কোনটি তা তিনি উল্লেখ করেননি।

তবে কাউকে আঘাত করোনা ইংরেজিতে লিখতে গিয়ে এক জায়গায় আঘাতের ইংরেজি শব্দ হার্ট-এর (Hurt) যে বানান লেখা হয়েছে, সেই বানানে হৃদয় এর ইংরেজি শব্দ হার্ট (Heart) লেখা হয়।

সম্ভবত এই ভুলটির কথাই বলছিলেন তিনি।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা।

You might also like

Leave a Reply

শিরোনাম